আল আমীন ইসলাম
স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট মানুষের দৈনন্দিন কাজ কর্মকে যেমন সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। তেমনি এগুলোর বিরূপ প্রভাবও সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির এই নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে সব থেকে প্রধান সমস্যা 'অনলাইন জুয়া'। আর এর প্রধান ভুক্তোভোগী বর্তমান যুবসমাজ।
'জুয়া' শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত থাকলেও, অনলাইন জুয়া শব্দটির সাথে ততটা পরিচিত নই। জুয়া বলতে আমরা ক্যাসিনো,তাস ইত্যাদি খেলার মাধ্যমে বাজি ধরাকে জেনে থাকলে,অনলাইন জুয়া ঠিক তা নয়। খেলার ধরন পরিবর্তন হয়ে স্মার্টফোনের বিভিন্ন অ্যাপস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই জুয়া পরিচালিত হয়ে থাকে। ক্রিকেট, ফুটবল, অনলাইন বেট, লুডু,অনলাইন ক্যাসিনো ইত্যাদি খেলাকে ধারণ করেই অনলাইন জুয়া সংগঠিত হয়। অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় বর্তমান যুবসমাজ অনলাইন জুয়াকেই প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়। প্রাথমিক দিকে কিছু টাকা উপার্জন হলেও, পরবর্তীতেই অপেক্ষা করে ভয়ংকর সর্বনাশ। প্রথম দিকে জেতার আনন্দে বিভোর হয়ে, আস্তে আস্তে মোটা অঙ্কের টাকা তারা বাজি ধরতে থাকে। এক পর্যায়ে সকল টাকা খুইয়ে, বেছে নেই হতাশার পথ। হারানো টাকা উঠানোর জন্য,ঋণ,ধার করে আরও বড় অঙ্কের টাকা বাজি ধরে বসেন অনেকে। এভাবেই অনলাইন জুয়া আমাদেরকে তার নেশায় আসক্ত করে ফেলে। যা থেকে আর ফিরে আসাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। এক পর্যায়ে আমাদের যুবকসমাজ টাকার প্রয়োজনে জড়িয়ে পড়ে,চুরি ডাকাতি,ছিনতাই,চাঁদাবাজির মতো ভয়ংকর অপরাধে। এভাবেই আমাদের সন্তান গুলো বনে যান বখাটে,কিশোরগ্যাংয়ের মতো নতুন নতুন পরিচয়ে।
খেলার ধরন পরিবর্তন হয়ে স্মার্টফোনের বিভিন্ন অ্যাপস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই জুয়া পরিচালিত হয়ে থাকে। ক্রিকেট, ফুটবল, অনলাইন বেট, লুডু,অনলাইন ক্যাসিনো ইত্যাদি খেলাকে ধারণ করেই অনলাইন জুয়া সংগঠিত হয়। অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় বর্তমান যুবসমাজ অনলাইন জুয়াকেই প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়।
অনলাইন জুয়া নামের এই মরণব্যাধি থেকে পরিত্রাণের উপায় সামাজিক, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সচেতনতা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, স্মার্টফোনের মাধ্যমে এই জুয়া সংগঠিত হওয়ার ফলে পরিবার,আত্মীয় স্বজন কেউই তাদের অপরাধ সম্পর্কে জ্ঞাত থাকেন না। এর জন্য সকল পরিবারের উচিত তার সন্তানের ওপর বাড়তি নজরদারি। এর পাশাপাশি, সরকার থেকে শুরু করে মিডিয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকল ক্ষেত্রেই অনলাইন জুয়ার যে ভয়াবহতা তা তুলে ধরতে হবে। অন্যথায়, এই অনলাইন জুয়া নামক মাদক থেকে আমাদের যুবসমাজ কে দূরে রাখা অসম্ভব প্রায়। অনলাইন জুয়ার এই সর্বনাশ প্রতিরোধের মধ্যদিয়েই আমাদের যুবসমাজকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে পরিচালিত করতে পারি। এভাবেই আমাদের আজকের যুবসমাজ আগামীদিনের ভবিষ্যৎ হিসেবে গড়ে উঠবে।