❒ স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা
ধ্রুব নিউজ
আসামির মাদকাসক্তি এবং দাম্পত্য কলহই এই ট্র্যাজেডির মূল কারণ
পারিবারিক কলহ ও মাদকাসক্তির জেরে স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে ঘাতক জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবু-কে মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসির আদেশ) দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৬ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৬ষ্ঠ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন টিপু চাঞ্চল্যকর এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাবেরুল হক সাবু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত বাবু আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
চাঁপাতলা গ্রামে তিনজনকেই শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহগুলো চেঙ্গুটিয়া এলাকার একটি বাগানে ফেলে নিজেই বসুন্দিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করেন
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামির মাদকাসক্তি এবং দাম্পত্য কলহই এই ট্র্যাজেডির মূল কারণ। ২০২২ সালের ১৫ জুলাই দুপুরে বাবু তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথি (৩২) এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া (৯) ও সাফিয়া (২)কে নিয়ে অভয়নগরের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন।
বিয়ের ১১ বছর পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছিল। বিভিন্ন দাবিতে বাবু প্রায়ই বিথিকে মারধর করতেন। যৌতুক বাবদ ১ লাখ ৬০হাজার টাকা দেওয়া হলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। ঘটনার দিনও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ও মারধর হয়। ফেরার পথে অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামে পৌঁছালে বাবু তিনজনকেই শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
পর তিনি মরদেহগুলো যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে চেঙ্গুটিয়া এলাকার একটি বাগানে ফেলে দেন। এরপর পরিবারের কাছে বিষয়টি জানিয়ে নিজেই বসুন্দিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করেন।
নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বিথির বাবা মুজিবর রহমান বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। তদন্তেও অভিযোগের সত্যতা মেলে। একপর্যায়ে অভয়নগর থানার এসআই গোলাম হোসেন ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাবুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
পিপি সাবেরুল হক সাবু বলেন, "দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু মাদকাসক্ত ছিলেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক রায় ঘোষণা করেন।" সোমবার আদালত বাবুকে ফাঁসির আদেশ দেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।