বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

ভোটের  আগে ‘নিশ্চুপ আতঙ্ক’, নিরাপত্তা শঙ্কায় যশোরের প্রার্থীরা

শেখ জালাল শেখ জালাল
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর,২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
ভোটের  আগে ‘নিশ্চুপ আতঙ্ক’, নিরাপত্তা শঙ্কায়  যশোরের প্রার্থীরা

❒ প্রতীকি ছবি ছবি:

যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনো ভোটের মাঠ সেভাবে গরম হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তলে তলে বইছে এক গভীর শঙ্কার হাওয়া। প্রচারণার প্রচারণার ডামাডোলের চেয়ে এখন নেতাদের ড্রয়িংরুমে বড় আলোচনার বিষয়—ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় যশোরের রাজনীতিকদের মধ্যে এক ধরনের অদৃশ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে আসন্ন ১৩তম জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের লড়াইয়ে নামার আগে অনেক প্রার্থীই এখন ব্যালট পেপারের চেয়ে 'বুলেট'-এর সুরক্ষাকে বেশি জরুরি মনে করছেন।

জেলা জামায়াতের আমির ও সংসদ সদস্যপ্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়ে সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ওপর জোর দিয়েছেন।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের তারিখ সামনে রেখে শুরু হয়েছে এক নতুন সমীকরণ। কেউ নিজের ও পরিবারের জানমাল রক্ষায় সরকারি অস্ত্রের লাইসেন্স চাচ্ছেন, আবার কেউ রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরই ভরসা রাখতে চাইছেন।

জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, যশোরে বর্তমানে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা ১ হাজার ১৩৪টি। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত সরকারের আমলে দেওয়া ৩৪২টি লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ১৭৪টি যাচাই-বাছাই শেষে পুনরায় বৈধতা পেয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন নীতিমালা প্রার্থীদের মধ্যে অস্ত্রের আবেদন করার নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি এবং নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি থেকে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫’ জারি করে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি, যশোরের প্রধান সমন্বয়ক নুরুজ্জামান  বলেন, ‘বিপ্লবী হাদির ওপর হামলার পর থেকে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় আমার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রয়োজন। আমি জেলা প্রশাসকের কাছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করব।’

জুলাই অভ্যুত্থানে যশোরের সমন্বয়ক  এমপি প্রার্থী রাশেদ খান ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘সরকার যদি শরিফ ওসমান হাদির মতো নেতাদের সুরক্ষা দিতে না পারে, তবে সাধারণ নাগরিকরা নিরাপদ বোধ করবে না। বিচারহীনতা ও সন্ত্রাস দমনে অস্পষ্টতা এই নিরাপত্তাহীনতা বাড়াচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে লাইসেন্সের আবেদন না করলেও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।’

যশোর-২ এর বিএনপি প্রার্থী  সাবিরা নাজমুল মুন্নি জানান, কয়েকদিন আগে গভীর রাতে তার বাড়িতে এক যুবক প্রবেশ করায় তিনি আতঙ্কিত। তিনি তার পিতার ব্যবহৃত অস্ত্রটি ফিরে পেতে আবেদন করেছেন, সেটি না পেলে নতুন আবেদন করবেন।

জেলা জামায়াতের আমির ও সংসদ সদস্যপ্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়ে সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি কোনো ব্যক্তিগত অস্ত্র বা গানম্যান নিতে ইচ্ছুক নন। একই অভিমত প্রকাশ করেছেন যশোর-২ আসনের জামায়াত প্রার্থী ড. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ।

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইরুফা সুলতানা জানান, ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা এসেছে।তফসিল ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেননি। আবেদন জমা পড়লে নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ধ্রুব নিউজের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

💬 Comments

Login | Register
Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)