ধ্রুব নিউজ
❒ জামায়াতে ইসলামি সনাতনী শাখা আয়োজিত হিন্দু সম্মেলন ছবি: ধ্রুব নিউজ
সকল মানুষের দেশ বাংলাদেশ। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, সকলের নাগরিক অধিকার সমান। এখানে কোন সংখ্যালঘু সংখ্যা গুরু নেই। আমরা বিশ্বাস করি, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে আমি দৃঢভাবে আশ্বাস দিচ্ছি, রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তা, সম্মান ও অধিকার রক্ষায় আমরা সর্বদা পাশে থাকব।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হিন্দু সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা আমির ও যশোর-৪ (বাঘারপাড়া) আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রাসূল এসব কথা বলেছেন। সংগঠনের সুন্দলী ইউনিয়ন সনাতন শাখার উদ্যোগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে সুন্দলী বাজারে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের ওই শাখার সভাপতি ডা. জগদীশ বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন যশোর-৫ আসনের (মনিরামপুর) জামায়াত মনোনিত এমপি প্রার্থী এড. গাজী এনামুল হক। অন্যান্যের মধ্যে জেলা সহকারী সেক্রেটারি গোলাম কুদ্দুস, প্রচার সেক্রেটারি শাহাবুদ্দীন বিশ্বাস, অভয়নগর থানা আমির সরদার শরিফ হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস এবং কালিদাস বক্তৃতা করেছেন ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম রসুল আরও বলেন, আমরা দৃঢভাবে বিশ্বাস করি দেশে গ্রহণযোগ্য, অংশ গ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে জুলাই সনদ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য। এছাড়া সকল দলের জন্য সমান সুযোগ ও স্বাধীন রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড জরুরী। তিনি বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রেখে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষার স্বার্থে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে পাঁচ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে।
জেলা আমির সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, দেশে এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। দুর্বৃত্তরা এসব অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষ এবং র্প্রাথীদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নির্বাচনের আগে এসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। জনগণ যেন ভয়ভীতি ছাড়া ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে এটি সরকারকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বী সহ সকল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ।
তিনি এলাকার সমস্যা নিয়ে বলেন, যশোরের মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ ভবদহ। আমরা ক্ষমতায় গেলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধানকে সর্বোচ্চ অগ্রধিকার দেওয়া হবে। নদী পুনঃখনন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্লান গ্রহণ করে মানুষকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করা হবে।
তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে সকল সম্প্রদায়র মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
উৎসবমুখর, জাঁকজমক ও সম্প্রীতিপূর্ণ পরিবেশে কয়েক'শ নারী পুরুষের ওই সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এড. গাজী এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় শত শত বছর ধরে এ ভূখন্ডে বসবাস করছে। তাঁদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অধিকার রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও রাজনৈতিকভাবে আপনাদের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেকোনো সংকটে, যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে, আপনাদের নিরাপত্তা, ধর্মীয় উৎসবের সুষ্ঠু পরিবেশ সকল ক্ষেত্রেই আপনাদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করব। আমাদের রাজনীতি বিভাজন নয় বরং সম্প্রীতি, সমতা ও মানবতার উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি সামাজিক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।