❒ বাংলাদেশের নির্বাচন
ধ্রুব ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের আগে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে হতে পারে এমন কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে ভারতকে পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। আন্তর্জাতিক এই থিংকট্যাংক বলেছে, প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক যখন তলানিতে, তখন ভারতের উচিত পরিস্থিতি সামাল দিতে সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে এক প্রতিবেদনে ভারতের করণীয় সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ তুলে ধরেছে ব্রাসেলসভিত্তিক স্বাধীন ও অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিজি। সংস্থাটি বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংঘাত নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক নির্বাচনে রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে ভারতের রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশ নিয়ে যে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছেন সেটা বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্কে না জড়াতেও নয়াদিল্লিকে পরামর্শ দিয়েছে আইসিজি।
সংস্থাটি বলছে, এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কিছু যৌক্তিকতা থাকলেও, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা রক্ষায় ঢাকাকে তার মতো করে ভারসাম্য বজায় রাখার সুযোগ দেওয়া উচিত। এই মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হিতে বিপরীত হতে পারে।
সংস্থাটি মনে করে, বাংলাদেশে ক্ষমতায় যেই থাকুক, একটি দক্ষ ও স্থিতিশীল সরকারই ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। ঢাকাকে আরও বেশি শত্রুভাবাপন্ন করলে তা বাংলাদেশকে চীন এমনকি পাকিস্তানের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের অবস্থানের বিষয়ে প্রতিবেদনে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতের বর্তমান সরকারের মতাদর্শের কারণে তারা বিদেশে হিন্দুদের হয়ে কথা বলতে বাধ্যবোধ করে।
নির্দিষ্ট ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা বৈধ হলেও, সমস্যাটিকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো বা বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে ভুয়া খবর ছড়ানো থেকে ভারতের বিরত থাকা উচিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এই উদ্বেগ বাংলাদেশে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ ভারতের নিজের দেশেই মুসলিমরা প্রায়ই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার।
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ভূমিকা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করে আইসিজি প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার দীর্ঘ রেকর্ড রয়েছে বিএসএফের। এই আচরণে পরিবর্তনে তাদের খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় না। সীমান্তে প্রতিটি প্রাণহানির ঘটনার সুষ্ঠু ও যৌথ তদন্ত হওয়া উচিত।
এ ছাড়া সম্পর্ক উন্নয়নে অবিলম্বে ভিসা কার্যক্রম পুনরায় চালু এবং পরিবহন ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।