লক্ষ্মীপুরে এসডিএফ'র স্বাস্থ্য-পুষ্টি কার্যক্রম: সুবিধাভোগী ৩৯ হাজার নারী

সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) লক্ষ্মীপুর জেলার তিনটি উপজেলার ২০০ টি গ্রামে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। “টেকসই উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ” রূপকল্পের আওতায় দরিদ্র ও অতিদরিদ্র নারীরা এই স্বাস্থ্য-পুষ্টি সুবিধা ভোগ করছেন।

সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এসডিএফ বিগত ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে জেলার রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি এই তিনটি উপজেলায় উল্লেখিত স্বাস্থ্য-পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশেষত উপজেলা গুলোর  চরাঞ্চলের ৩৯ হাজার দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা নিশ্চিত করতে স্বায়ত্ব শাসিত এই সংস্থাটি কাজ করছে। 

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সংস্থাটি অদ্যবধি গ্রামীণ দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করেছে। তাদের রূপকল্প “টেকসই উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ”

জেলার রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি এই তিনটি উপজেলায় আটটি ক্লাস্টার অফিসের মাধ্যমে ২০০ টি গ্রামের ৩৯,২৯৭ টি (দরিদ্র ১২,০৩৯ টি ও অতি-দরিদ্র ২৫,২৫৮ টি) পরিবার এই প্রকল্পের সরাসরি উপকার ভোগ করছেন।

উল্লেখিত কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এসডিএফ জেলা অফিস ৩০ নভেম্বর, রোববার সকাল ১১ টায় রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সম্মেলন কক্ষে এক কর্মশালার আয়োজন করে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. বাহারুল আলম। সভাপতিত্ব করেন সংস্থার জেলা ব্যবস্থাপক মো. আহসানুল আলম খন্দকার। স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা ডা. বায়েজীদ বোস্তামী আকাশ এর সঞ্চালনায় কর্মশালায় জেলা কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আরিফুর রহমান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, ক্লাস্টার কর্মকর্তা-হুমায়ুন কবির, উম্মে জাহান কোহিনুর ও আব্দুল করিম,  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সংস্থার  জেলা ও ক্লাস্টার পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তাপ্রাপ্ত সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, আরইএলআই (RELI) প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত টেকসই বাংলাদেশ গড়ার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ। সে লক্ষ্যে সরকারের আর্থিক সহায়তায় দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গতানুগতিক প্রক্রিয়ার বাইরে ব্যতিক্রমী উদ্ভাবন “কমিউনিটি চালিত উন্নয়ন (সিডিডি)” কৌশল প্রয়োগ করে সারাদেশের ২০ টি জেলায় ০৫ বছর মেয়াদি (জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২৬) এ প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।

এই প্রকল্পের আওতায় চলমান স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কার্যক্রমগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আচরণ পরিবর্তন (বিসিসি) সেশন, গ্রাম পর্যায়ে হেলথ ক্যাম্প ও টেলিমেডিসিন সেবা, মাতৃত্বকালীন ও সিজারিয়ান ভাতা প্রদান, মৌসুমী সবজি বীজ বিতরণ, খাবার স্যালাইন ও হাত ধোয়া সাবান বিতরণ উল্লেখযোগ্য । সংস্থাটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের বাইরে সাংগঠনিক দক্ষতা উন্নয়নে দরিদ্র ও অতিদরিদ্র নারীদের জীবিকায়নে আয়বর্ধনমূলক কাজের কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ঘূর্ণায়মান তহবিল প্রদান, স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।

বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান, মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষাবৃত্তি প্রদান, সহায় সম্বলহীনদের এককালীন অনুদান প্রদান এবং গ্রামীন কৃষি উদ্যোক্তা তহবিল সহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।