গঙ্গানন্দপুর, (ঝিকরগাছা) প্রতিনিধি
❒ বাগানের ফল পরিচর্যা করছেন কৃষক মিন্টু ছবি: ধ্রুব নিউজ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের কৃষক মিন্টু হোসেন গতানুগতিক কৃষির বাইরে হেঁটে দেখিয়েছেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উচ্চ ফলনশীল চায়না থ্রি জাতের কমলা চাষ করে তিনি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন। আধুনিক চাষ পদ্ধতি ও সামান্য পরিচর্যার মাধ্যমে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি তার কমলা বাগানকে পরিবারের প্রধান আয়ের উৎসে পরিণত করেছেন। তার এই উদ্যোগ আজ শুধু তার পরিবারের আর্থিক স্বাবলম্বীতাই নিশ্চিত করেনি, বরং এলাকার অন্যান্য কৃষকদেরও নতুন, লাভজনক চাষাবাদে উৎসাহিত করছে। বর্তমানে তার এই সফল বাগান থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় হচ্ছে।
কৃষক মিন্টু হোসেন জানান, প্রথমে তিনি ছোট পরিসরে শখের বশে কয়েকটি চায়না থ্রি কমলার চারা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমবারেই আশাতীত ফলন দেখে তিনি বাণিজ্যিকভাবে এই ফলের চাষ শুরু করার উদ্যোগ নেন। এই জাতের কমলার বিশেষত্ব হলো এর দ্রুত বৃদ্ধি, ফলন তুলনামূলকভাবে বেশি এবং বাজারে এর ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় আয়ও বেশি হয়।
মিন্টু হোসেন বলেন, “চায়না থ্রি কমলা চাষ খুব বেশি ঝামেলার না। নিয়মিত সার, পানি আর একটু যত্ন নিলেই ভালো ফল পাওয়া যায়। আমার বাগান এখন আমার পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস।”
মিন্টু হোসেনের এই সাফল্য শুরুতে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। স্থানীয় কয়েকজন প্রতিবেশী কৃষক তাদের সংশয়ের কথা জানিয়ে বলেন, ‘প্রথমে আমরা তো বিশ্বাস করেছিলাম না, মনে করেছিলাম ছেলেটার হয়তো অনেক টাকা লস হবে। কিন্তু এখন তো দেখি অন্য ফসলের চেয়ে এখানে অনেক টাকা লাভ, খরচও কম লাগে এবং সময়ও কম দিতে হয়।’
প্রতিবেশীরা এখন মিন্টু হোসেনের সাফল্য দেখে নিজেরাও কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা মিন্টু হোসেনের এই উদ্যোগে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, “চায়না থ্রি কমলার এই জাতটি বাংলাদেশের আবহাওয়ার জন্য বেশ উপযোগী। মিন্টু হোসেনের সাফল্য প্রমাণ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল হতে পারে। তার সফলতা দেখে এখন অনেক কৃষকই আমাদের কাছে কমলা চাষের পরামর্শ নিতে আসছেন।”
ঝিকরগাছার এই কৃষক মিন্টু হোসেন শুধু নিজের জীবনযাত্রার মানই উন্নত করেননি, বরং এলাকার অন্য কৃষকদেরও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। তার এই সাফল্যের গল্প আজ অনেকের কাছেই এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা।